জীবন মানে টা কি
জীবন মানে টা কি ?
জীবনের বেশিরভাগ সময়ই আমরা ভয় নিয়ে বেঁচে থাকি। হারানোর ভয়, কষ্টের ভয়, সমাজের-রাষ্ট্রের ভয় ইত্যাদি নানানরকম ভয়। ছোটবেলা থেকেই আমাদের মাঝে ভয়ের বীজ বুনে দেয়া হয়। আস্তে আস্তে তা বড় হতে থাকে, শাখা গজায়। ছোটবেলা থেকেই আমি ছিলাম ভীতু মানুষ। মার খাব, বকা খাব এইসব ভয় নিয়ে নিজের ইচ্ছেগুলো নিয়ে খুব শক্তভাবে দাঁড়াতে পারতাম না। অবশ্য আব্বু-আম্মু অনেক ভালোবাসতো। কিন্তু শুকনা ছিলাম বলে ছিলো নানান বিধি-নিষেধ। জীবনের এক পর্যায়ে গিয়ে জুজুর ভয় কেটে যায় আমার অনেকটা। কে কি ভাবলো, বললো এইসব নিয়ে ভয় হতো না আর। ভয় থাকলে আত্মবিশ্বাস থাকে না, নিজেকে ঠিকভাবে জানা বা বোঝা সম্ভব হয় না। যুক্তি এলোমেলো হয়ে যায় অনেক ক্ষেত্রেই। বিপদে পড়লে তখন মাথায় আসে, হোয়াই মি!
শব্দ বা কথা খুব বিপদজনক হতে পারে, যাদু করতে পারে। শব্দের ক্ষমতা নেই সরাসরি ক্ষতি বা ভালো করার। শব্দ মানুষকে অনুপ্রাণিত করে, আবার একদম শেষ করে দেয় ধুমরে-মুচড়ে। শব্দের কালো-যাদু থেকে নিজেকে রক্ষা করা কঠিন কাজ। ভয় যখন কাজ করে তখন নানান কথার কালো-যাদু বেশি মাত্রায় কাজ করা শুরু করে। সারাজীবন ধরে ভাত খাওয়া মানুষটিরও মনে হতে পারে ভাতই তার জীবনের সবচেয়ে বড় অভিশাপ! ভয় এবং শব্দের যাদু মানুষকে চরমভাবে হতাশ করে দিতে পারে এবং আত্মবিশ্বাসের ১২টা বাজিয়ে ছাড়ে। কি হবে, কে কি বললো-ভাবলো, এইসব নিয়ে খুব ভেবে ভালো কিছু হয়না। কারো কথায় নিজের জীবনের সব মিথ্যেও হয়ে যেতে পারে না। নিজ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিজেকেই নিতে হয় এবং নিজের পক্ষেই সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব। ঝুঁকি ভালো বা খারাপ দুই ফলাফলই নিয়ে আসতে পারে। কিন্তু যে পরিস্থিতি বা অবস্থা বর্তমানে ভালো না, তা সামনেই ভালো হবে এই আশা করে বসে থাকার কোন কারণ নেই।
ঝুঁকি নিয়ে সাময়িক কষ্টের মাঝে দিয়ে যেতে হলেও ভবিষ্যতে ভালো কিছু থাকে বলেই আমার বিশ্বাস। অন্তত নিজের মত করে নিজের ঠিক করা পথে হাটা যায় উদ্যম নিয়ে এবং দিনশেষে বলা যায়, আমি যা করছি জেনে, বুঝেই করছি। ভালো-খারাপ যাই হোক দায় আমার। অন্তত জীবনের শেষ বয়সে বলতে হবে না যে, অন্যের উপর ভরসা করে, অন্যের কথায় বিশ্বাস করে আজ এই দশা আমার.......